Menu
Categories
ইটের তৈরী বিল্ডিং ভূমিকম্প সহনীয় করার পদ্ধতি
June 7, 2021 blog

আমাদের দেশে মফস্বল ও গ্রাম এলাকাতে অনেকেই ব্রীক ওয়াল সাপোর্টেড বিল্ডিং করছেন। অনেক সময় খরচ কমানোর জন্য। আবার অনেক ক্ষেত্রে চমৎকার কোন ক্লাসিকাল আর্কিটেকচারাল ফর্ম তৈরীর জন্যও ব্রীকের বিল্ডিং ডিজাইন করা হচ্ছে।

ভূমিকম্প সহনীয় বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে বীম, কলাম, শিয়ার ওয়াল, ব্রেসিং – এর সমন্বয়ে তৈরী বিল্ডিংয়ে আমরা যতটা নজর দেই , ব্রীকের বিল্ডিংগুলো অনেকক্ষেত্রেই থেকে যায় উপেক্ষিত । একারনে এই বিল্ডিংগুলা অনেক সময় শুধু মিস্ত্রীর পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানেই তৈরী হচ্ছে কোন সঠিক নির্দেশনা/স্ট্রাকচারাল ডিটেইলিং ছাড়াই।

ব্রীক ম্যাসনরী বিল্ডিংয়ের ওয়ালগুলো তার দৈর্ঘ্য এবং উচ্চতার সাপেক্ষে খুব স্লেন্ডার হয়। এইটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায় যখন ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ওভারটার্নিং মোমেন্ট জনিত বল বিল্ডিং কে উপড়ে ফেলার জন্য চেষ্টা করে। এই স্লেন্ডারনেস কমানোর জন্য খুব চিকন অনেক বেশী লম্বা/উঁচু ওয়াল পরিহার করা উচিত।

আরেকটা ব্যাপার হল দরজা জানালার ওপেনিং গুলা যতটা ছোট রাখা যায় ভূমিকম্পে সেই বিল্ডিংয়ে পারফরমান্স তত ভালো হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে বিল্ডিং কোডে স্পেসিফিক গাইডলাইন আছে যা ফলো করা উচিত।

আরেকটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এইসব বিল্ডিংয়ের ভূমিকম্প ঝুঁকি কমানোর জন্য দরজা/জানালার উপর দিয়ে যদি টানা একটা লিন্টেল দেয়া যায় পুরো চারপাশ জুড়ে তাহলে এই বিল্ডিংয়ের পারফর্মান্স অনেক বেড়ে যায়। ওয়াল্গুলাতে ভূমিকম্পের কারনে যেই স্ট্রেস তৈরী হয় তা প্রতিরোধ করার জন্য তখন পুরো বিল্ডিংটা একটা বক্সের মত আচরন করে এবং ভূমিকম্পনজনিত বল প্রতিহত করে।

ভারতের ১৯৯৩ সালের মহারাস্ট্রের লাতুর ভূমিকম্পে প্রায় দশ হাজার মানুষ মারা যায় এবং ত্রিশ হাজার লোক আহত হয়। আগেরদিন রাতে একটা উৎসব শেষ করে অধিকাংশ মানুষ গভীর নিদ্রায় ছিল। ভোরের দিকের এই ভূমিকম্পে ঘুমের মধ্যেই বিল্ডিং ধ্বসে অধিকাংশ মানুষ মারা যায়। এই ভূমিকম্পে দেখা যায় যেসব ম্যাসনরী বিল্ডিংয়ে লিন্টেল ব্যান্ড আছে এরা খুব ভালো পারফর্ম করেছে এবং লিন্টেল ব্যান্ড ছাড়া নির্মিত বিল্ডিংগুলো কলাপ্স করেছে। সংযুক্ত ছবিতে এই ধরনের একটা কেইস স্টাডী দেখা যাচ্ছে।

আমাদের সচেতনতাই যেকোন ভয়াবহ দূর্যোগ থেকে সবাইকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।

তথ্যসূত্রঃ
১। ফেডারেল ইমারজেন্সী ম্যানেজমেন্ট এজেন্সী, যুক্তরাষ্ট।
২। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০, বাংলাদেশ।
৩। ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার ফর আর্থকোয়েক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডিয়া ।

Comments are closed
*