Menu
Categories
বিল্ডিংয়ের নীচ তলায় ওয়াল না থাকার ভূমিকম্পজনিত ঝুঁকি
June 7, 2021 blog

অনেক সময় পার্কিংয়ের সুবিধার জন্য কিংবা আর্কিটেকচারাল অ্যাসথেটিকসের কারনে বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় চারপাশে পার্টিশন ওয়াল দেয়া হয়না।

উপরের ফ্লোরগুলাতে ওয়াল আছে, আর গ্রাউন্ড ফ্লোরে নাই – এই সিচুয়েশনে উপরের তালাগুলা অপেক্ষাকৃত বেশী স্টিফ আর নিচতালা একটু ফ্লেক্সিবল হয়ে যায়। ভূমিকম্পে এই বিল্ডিংগুলা উলটানো পেন্ডুলামের মত আচরন করে। উপরে স্টিফ আর নিচে ফ্লেক্সিবল। ভূমিকম্পের দোলনে ফ্লেক্সিবল গ্রাউন্ড ফ্লোর ফেইল করে স্ট্রেস কনসেন্ট্রেশন এর কারনে। এইটাকে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভাষায় “সফট স্টোরী” ইফেক্ট বলে।

১৯৯৪ সালের আমেরিকার নর্থরিজ ভূমিকম্পে দেখা যায়, লস আঞ্জেলসের মিডোজ অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের নিচতলা পার্কিংয়ের জন্য ওপেন রাখা হয়েছিল। ভূমিকম্পে ওই বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোর কলাপ্স করে এবং ১৬ জন মারা যান।

১৯৯৯ এর তুর্কি, ১৯৯৯ এর তাইওয়ান ও ২০০৩ এর আলজেরিয়ান ভূমিকম্পেও একই ফলাফল দেখা যায়। ২০০১ এর ভূজ ভূমিকম্পে ভারতের আহমেদাবাদের প্রায় ১০০ এর বেশী বিল্ডিং সফট স্টোরী ইফেক্টের কারনে কলাপ্স করে।

“সফট স্টোরী” কলাপ্স থেকে বিল্ডিংকে রক্ষার জন্য সবচেয়ে ভালো সমাধান নিচ তালায় চারিদিকে পার্টিশন ওয়াল দিয়ে দেয়া। একান্তই কোন এলিগ্যান্ট আর্কিটেকচারাল সৌন্দয্য তৈরীর নিমিত্তে যদি নিচতলা ওপেন রাখতেই হয়, তবে স্ট্রাকচারাল ডিজাইনটা খুব কেয়ারফুলী করতে হবে। এক্ষেত্রে আর্কিটেক্ট ও স্ট্রাকরাচাল ইঞ্জিনিয়ারের প্রপার কলাবরেশন খুবই জরুরী। ল্যাটারাল লোড রেসিস্টিং সিস্টেমে পরিবর্তন করে অথবা নিচতলার স্টিফনেস বাড়িয়ে কিংবা বিল্ডিংয়ের ফান্ডামেন্টাল পিরিয়ডকে টিউনিং করে সফট স্টোরী ইফেক্ট এড়ানো যেতে পারে। হয়তো সেক্ষেত্রে সামান্য কিছু বেশী খরচ হবে যেটা বিল্ডিংয়ের মালিককে বহন করতে হবে। তাহলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে হয়ত বিল্ডিং আরো ভালোভাবে পারফর্ম করবে।

যেসব বিল্ডিং ইতিমধ্যে ওপেন গ্রাউন্ড ফ্লোর সহ কনস্ট্রাকশন হয়ে গেছে সেগুলো অতি সত্ত্বর একজন এক্সপার্টের তত্ত্বাবধানে সাইসমিক অ্যাসেসমেন্ট করা উচিত এবং প্রয়োজনীয় রেট্রোফিটিং এর মাধ্যমে বিল্ডিংকে মজবুত করে ফেলা ভালো।

(সংযুক্ত ছবিটি 2001 এর ইন্ডিয়ার ভুজ ভূমিকম্পে সফট স্টোরী কলাপ্সের একটা নমুনা)

Comments are closed
*