Menu
Categories
বিল্ডিং ডিজাইনের কনসাল্টেন্সী ফী
June 7, 2021 blog


একজন ক্লায়েন্ট যখন বিল্ডিং ডিজাইন করতে একটি কনসাল্টিং ফার্মে আসেন তখন কনসালটেন্ট এর মূল লক্ষ থাকে কিভাবে বাড়িটি অ্যাসথেটিক্যালী প্লীজিং, ফাংশনাল, স্ট্রাকচারালী সাউন্ড, ইকোনমিক, এবং ইলেকট্রোমেক্যানিকালী ইফিসিয়েন্ট করা যায় |

কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ক্লায়েন্ট এতোটাই কম কনসাল্টিং ফী অফার করে একটা বিল্ডিং ডিজাইন সার্ভিস চান যেটা দিয়ে একজন প্রফেশনালের সার্ভিস দেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনা। সেক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট একজন নন-প্রফেশনাল/নন-লাইসেন্সড/নন-রেজিস্টার্ড প্রফেশনালের দ্বারস্ত হন কিংবা কোন নির্মাণ মিস্ত্রীর পরামর্শ নেন। তখন তিনি হয়তো ডিজাইনের ফী কিছুটা সেভ করে আত্নতৃপ্তি পান যেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল নির্মাণ খরচের ১ থেকে ২ পারসেন্ট। অন্যদিকে বিল্ডিংটা বিভিন্ন ফাংশনাল ও স্ট্রাকচারাল ডিসর্ডারে ভূগে। আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্মাণ খরচ অনেক বেড়ে যায় । বিভিন্ন ধরনের রেট্রোফিটিং, রিহাবিলিটেশন দরকার হয় যাতে বিল্ডিংয়ের লাইফ সাইকেল কস্ট বেড়ে যায়।

একজন প্রফেশনাল আর্কিটেক্টের সাহায্য ছাড়া আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করলে অনেকধরনের ফাংশনাল, অ্যাসথেটিক্যাল ও স্পেস ডিস্ট্রিবিউশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন সঠিকভাবে ড্রাইভওয়ে ডিজাইন না করাতে পার্কিংয়ের সমস্যা হতে পারে। পর্যাপ্ত আলো বাতাসের সমস্যা হতে পারে। সঠিক ফ্রেমিং প্লানের অভাবে বেড্রুমের মাঝখানে বীম চলে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটতে পারে।

অন্যদিকে অপটিমাইজড স্ট্রাকচারাল ডিজাইনের অভাবে বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ওয়ালে ক্রাক, বীমের অস্বাভাবিক ঝুলে যাওয়া, বিল্ডিংয়ের সামনে কোন ভারী যানবাহন চলাচল করলে বিল্ডিংয়ের অতিরিক্ত কম্পন, ওয়াল ডাম্প হয়ে যাওয়া। খুব ক্রিটিক্যাল ভূল হলে বীম, কলাম কিংবা ফাউন্ডেশন কলাপ্স, বিল্ডিং কাত হয়ে যাওয়া। ভূমিকম্পের সময় অনাকাংক্ষিত পারফরমেন্স কিংবা ফেইল করা। যেখানে রিবার বেশী দেয়া দরকার সেখানে কম, যেখানে কম দেয়া দরকার দেখা গেল সেখানে বেশী দেয়া হয়েছে। তাই বিল্ডিং ফেইল করার ঝুঁকির পাশাপাশি বিল্ডিং নির্মাণের খরচও অনেক বেড়ে যেতে পারে। একজন দক্ষ প্রফেশনাল স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার ডাইনামিক অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে বিল্ডিংয়ের ভূকিম্পকালীন ঝুঁকিকে সঠিকভাবে মেজার করতে পারবেন। একটা রেগুলার শেপ বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ডাইনামিক অ্যানালাইসিস অনেক ক্ষেত্রে বিল্ডিংয়ের ভূমিকম্পজনিত শিয়ার ফোর্স কমিয়ে ইকোনমিক ডিজাইন তৈরীতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে খরচ অনেক কমে যায় ও বিল্ডিংয়ের সেইফটী নিশ্চিত হয়।

একজন প্রফেশনাল ইলেকট্রিক্যাল ডিজাইনার বিল্ডিংয়ের ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমকে এনার্জি সিমুলেশন করে আপনাকে একটা সাশ্রয়ী ডিজাইন প্রদান করতে পারবে। যাতে আপনার অনেক বিদ্যুত বিল সেইভ হবে। বর্জপাত, সর্ট সার্কিটের ঝুঁকি কমবে।

একজন প্রফেশনাল প্লাম্বিং ডিজাইনার আপনার বিল্ডিংয়ের ওয়াটার সাপ্লাই ও বর্জনিষ্কাশনে ইনোভেটিভ সল্যুশন নিয়ে অধিক সময় দিতে পারবেন।

একজন প্রফেশনাল মেকানিক্যাল ডিজাইনার ভবনের ভার্টিকাল সার্কুলেশন, ফায়ার ডিটেকশন ও প্রটেকশনের জন্য বেস্ট গাইডলাইন দিতে পারবেন।

বিল্ডিং ডিজাইন ও নির্মাণের জন্য আপনাকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ মেনে চলতে হবে। যেটা ভবন মালিক ও ডিজাইনার দুইপক্ষের জন্যই প্রযোজ্য। বিল্ডিং কোড ভায়োলেশন একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল কিংবা ৫০,০০০ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় শাস্তি হতে পারে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ এ কোন ধরনের ভবন কাকে দিয়ে ডিজাইন করানো যাবে তার তালিকা দিয়ে দেয়া হয়েছে। যেটা চিত্রে সংযুক্ত আছে। এর ব্যতিক্রম করাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আপনার ভবনটি একজন রেজিস্ট্রার্ড ডিজাইন প্রফেশনাল কে দিয়ে ডিজাইন করুন। এতে বিল্ডিং কোড কমপ্লাই হবে, বিল্ডিং দৃষ্টিনন্দন হবে, নির্মাণ ব্যয় কমবে এবং ভূমিকম্প-ঘুর্নিঝড়-বন্যার মত মারাত্নক প্রাকৃতিক দূর্যোগে থাকবেন সূরক্ষিত।

#বিল্ডিং_ডিজাইন #Building_Design

Comments are closed
*