এখন অনেকেই ছাদে বাগান করতে চান। বাসার ছাদে যদি থাকে একটুখানি বাগান তাহলে পরিবেশটা অন্যরকম হয়ে উঠে। করোনার মত দূর্যোগে পরিবারের সদস্যদের দম নেয়ার অন্যতম একটা জায়গা হল ছাদ বাগান। আবার শাক-সবজি চাষ করে ভেজালমুক্ত খাবারের মাধ্যমে পরিবারের পুষ্টির চাহিদাও মেটানো যায়।
তবে ছাদে বাগান করতে হলে অবশ্যই পরিকল্পিত ভাবে করতে হবে। বিল্ডিং ডিজাইনের শুরুতে অবশ্যই আর্কিটেকচারাল ডিজাইনে গ্রীন রুফিং এর উল্লেখ থাকা উচিত। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার যখন বিভিন্ন কম্পোনেন্ট এর লোড ক্যালকুলেশন করেন তার মূল ব্যাসিস হল ওই জায়গাটার ব্যবহারের প্রকারভেদ। আপনার বিল্ডিং এর ডিজাইনে ছাদে বাগান না দেখানো থাকলে তার জন্য অতিরিক্ত লোড স্ট্রাকচারাল ক্যাল্কুলেশনে আসবে না। আমাদের বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে নরমাল ফ্ল্যাট রুফের লাইভ লোড প্রতি স্কয়ার ফিটে নূন্যতম ২০ পাউন্ড। আর ছাদে বাগান থাকলে তা বেড়ে গিয়ে ১০০ পাউন্ড। অর্থাৎ পাঁচগুন বেশী। আর মাটির লোড কিন্তু কনক্রীটের তুলনায় খুব একটা কম না। ৬ ইঞ্চি মাটির লোড ৫ ইঞ্চি কনক্রীটের একটা স্ল্যাবের প্রায় সমান। সুতরাং এই অতিরিক্ত লোড না ধরা থাকলে আপনার বিল্ডিং কিন্তু অনিরাপদ হতে পারে।
অনেক সময় ডিজাইনে না থাকার পরেও পরবর্তীতে অনেকে ছাদে বাগান করেন বা করতে চান । সেক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে যথাযথ লোডের জন্য বিল্ডিংয়ের ক্যাপাসিটি চেক করে নেয়া। ক্যাপাসিটি কম থাকলে প্রয়োজনীয় রেট্রোফিট করে নেয়াটা সবচেয়ে নিরাপদ।
আরেকটা বিষয়টা হচ্ছে পর্যাপ্ত ওয়াটার প্রুফিং খুব জরুরী। ছাদের বাগানে জমা পানি যাতে লিক করে বিল্ডিং এ না ঢুকতে পারে এজন্য পুরো কাজটা একজন অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারের সুপারভিশনে করা উচিত।
আমরা ২০১৬ সালে ছাদে বাগান বিষয়ে গবেষনা করে দেখেছি যে , ছাদে বাগান করার অনেক সুবিধার একটা অন্যতম হচ্ছে – বিল্ডিংয়ের তাপ শোষণ কমায়। ফলশ্রুতিতে এনার্জি কনজাম্পশন/ এসি ইউজ কম হয়। বিদ্যুত বিল সেভ হয়। এই সংক্রান্ত আমার রিসার্চ পেপারটি নিচের লিংকে যুক্ত করছি।