Menu
Categories
বিল্ডিংয়ের গ্যাপ কম থাকার ঝুঁকি
June 19, 2020 blog

আমাদের বিল্ডিং কোডে দুইটি বিল্ডিং এর মাঝে যথেষ্ট জায়গা রাখার জন্য জমির পরিমাণের উপর ভিত্তি করে সেটব্যাকের মান নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে। কিন্তু ঢাকায় জায়গার অপ্রতুলতার কারনে অনেক বিল্ডিং মালিক এই সেটব্যাক মানতে চান না। আবার সেটব্যাক ঠিক থাকলেও উপরের তলা গুলোতে ক্যান্টিলিভার স্ল্যাব বের করে পুরো জায়গা নিয়ে নেন।

এতে বিল্ডিংয়ের ফাংশনালিটি চরমভাবে ব্যহত হয়। আলো – বাতাস ঢুকতে পারেনা। যারা বিল্ডিংয়ে বসবাস করেন তাদের হেলথ এর উপর বাজে প্রভাব পড়ে।

আরেকটা বড় সমস্যা হচ্ছে ভূমিকম্পের কারনে “পাউন্ডিং” ইফেক্ট। ভূমিকম্পের দোলনের কারনে পাশাপাশি দুটি বিল্ডিংয়ের গ্যাপ পর্যাপ্ত না হলে এক বিল্ডিং আরেক বিল্ডিং কে ঠোকাতে বা ধাক্কাতে থাকে। দুইটা পাশাপাশি বিল্ডিং এর হাইট এক হলে বীম, ফ্লোর কিংবা বীম-কলাম জয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর দুইটা বিল্ডিংয়ের হাইটে পার্থক্য থাকলে একটার বীম অন্যটার কলামে গিয়ে হিট করে। এটা সবচেয়ে বেশী বিপজ্জনক।

১৯৮৫ সালে মেক্সিকোতে ভয়াবহতম ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্পে দশ হাজারের বেশী মানুষ মারা যায়, ত্রিশ হাজার মানুষ ব্যাপকভাবে আহত হয় এবং প্রায় আড়াই লাখ মানুষ গৃহহীন হয়। চারশ এর বেশী বিল্ডিং ভেংগে পড়ে এবং এক হাজারের বেশী বিল্ডিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র পাউন্ডিং এর কারনেই শতকরা প্রায় ১৫ ভাগ বিল্ডিং ভেংগে পড়ে ও ৪০ ভাগ বিল্ডিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

একই ধরনের ক্ষতি হয়েছে ১৯৯৪ এর নর্থরিজ, ১৯৯৫ এর কোবে, ১৯৯৯ এর কোজাইলি আর ২০০৮ এর শিচুয়ান ভূমিকম্পে।

ঢাকা ও অন্যান্য শহরগুলোর বিল্ডিং নির্মাণের যেই সংস্কৃতি বড় ধরনের ভূমিকম্পে পাউন্ডিং এর কারনেই অনেক বিল্ডিং ফেইল করবে এবং প্রচুর ক্যাজুয়ালিটি হবে।

আমাদের সচেতনতাই যেকোন দূর্যোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।

তথ্যসূত্রঃ আমেরিকান সোসাইটি অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

*