আমার গুটেনবার্গ আওয়ার্ড প্রাপ্তি

তখন বুয়েটে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছি। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজে অনেক স্টুডেন্ট কে পড়াই কিন্তু বাসায় জানেনা। কারন আমার আব্বুর নীতি হলো সারাদিন পড়ালেখা করতে হবে। কোন টিউশনি করা যাবেনা। টিউশনি করলে পড়ালেখা নষ্ট হবে।


তাই আব্বুকে না জানিয়েই টিউশনি করতাম। ঢাকায় বাসা হওয়া সত্ত্বেও হলে থাকতাম। কারন বাসায় থাকলেই আব্বু পেইন দিতো। খালি পড়া পড়া পড়া। ভার্সিটিতে উঠার পরেও। তো একদিন ভাবলাম ল্যাপটপ কিনবো একটা । কিন্তু আব্বুর কাছে চাইলেই আব্বু বলবে, ‘ডেস্কটপ থাকতে ল্যাপটপ কেনো?’


হাতে বেশ কিছু টাকা আছে। কিন্তু এখন নিজের টাকা দিয়ে ল্যাপটপ কিনলে আব্বু সন্দেহ করবে যে এতো টাকা কোথায় পেলাম।

একটা প্ল্যান করলাম । আমার এক বন্ধু ঢাবির চারুকলা থেকে পাশ করেছেন। সাহিত্য টাহিত্য করেন। ম্যাগাজিন – ফ্যাগাজিন বের করেন। নাম হলো মোমিন মেহেদী।


উনাকে বললাম , মোমিন ভাই আপনার পত্রিকায় একটা লেখা ছাপান। লেখাটা হবে যে, বুয়েটের ছাত্র জাহের ওয়াসিম সাহিত্যে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য গুটেনবার্গ আওয়ার্ড পেয়েছেন। পুরস্কার হিসেবে দু’শ ত্রিশ ডলার পেয়েছেন।


পরেরমাসে মোমিন ভাইয়ের পত্রিকা স্বপ্নালোকে বড় করে নিউজ ছাপা হলো – “বুয়েট ছাত্রের বৃত্তি লাভ” ।
পত্রিকাটা আব্বুকে নিয়ে দেখালাম। আব্বুতো খুব খুশি তার অকর্মা গাধা শ্রেনীর ছেলে গুটেনবার্গ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছে। বললো, এই টাকা দিয়ে কি করবি? আমি বললাম , আব্বু আমার একটা ল্যাপটপ কেনা দরকার। তুমি কিছু দাও বাকিটা স্কলারশীপের টাকা থেকে ম্যানেজ হয়ে যাবে। এভাবেই কেনা হয়ে গেলো একটা ল্যাপটপ।



বুয়েট থেকে পাশ করার পর আব্বু জিজ্ঞাস করলো তোমার সব ফ্রেন্ডতো বিদেশে পড়তে যাচ্ছে ফান্ড নিয়ে। তুমি কোন চেষ্টা করতেছো?
আমি বললাম, গুটেনবার্গ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছি দেখি কোন আপডেইট আসে কিনা।
আব্বু বললো- সিরিয়াসলি ট্রাই করো।

#গল্প #জাহের_ওয়াসিম #গুটেনবার্গ_আওয়ার্ড