বসুন্ধরা বি ব্লক

ghostচারবছর আগের ঘটনা। তখন বুয়েটে লেভেল-৩ এ। নতুন টিউশনীতে গেছি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। ব্লক বি ৮৩/৭ নাম্বার বাসা। । রাত আটটার দিকে। স্টুডেন্টের বাসা তিন তলায়। সিড়ি দিয়ে উঠে ডান পাশে। আমি তিনতলায় উঠে স্টুডেন্টের বাসার গেটে কড়া নাড়ছি। ওদের কলিংবেল মনে হয় নষ্ট। বাটন চাপলেও কোন শব্দ হচ্ছেনা ভিতরে। অনেকক্ষন ধরে কড়া নাড়ছি। কেউ খুলেনা। মোটামুটি তিন – চার মিনিট পর দরজা খুলল। সাদা ফতুয়া পরা ধবধবে সাদা টাক মাথার বয়স্ক এক লোক।

আমি বললাম, ” ফুয়াদ আছে? ” ভদ্রলোক কিছু বললেন না। সোফার দিকে তাকিয়ে আমাকে বসতে ইংগিত করলেন। ভদ্রলোক ভিতরে চলে গেলেন। এবং সাথে সাথে কারেন্ট চলে গেলো। পুরা রুম অন্ধকার। বাসার ভিতরে কারো কোন সাড়াশব্দ নাই। ওই ভদ্রলোকের কোন খবর নাই। আমি ভয় পেয়ে জোরে চিল্লায়ে বললাম – আংকেল মোমবাতি আছে? নিজের গলার স্বর নিজেই চিনতে পারছিলাম না। কিন্তু কেউ কোন কথা বলছেনা। আমি মোবাইল বের করে স্টুডেন্টের নাম্বার বের করে ফোন দিলাম।

“ফুয়াদ তুমি কোথায়? বাসায় নাই?”

“স্যার আমিতো বাসায়।”

“বাসায় মানে ? আমি তোমাদের ড্রয়িং রুমে বসে আছি। কারেন্ট চলে গেছে। বুড়ো এক আংকেল দরজা খুলে দিয়েছে। কিন্তু কেউ তো মোমবাতি দিলনা।”

“ও মাই গড ! স্যার আপনি তিনতলায় চলে গেছেন !! আমাদের বাসাতো দোতলায়।”

“বলো কি? বুড়া লোকটাতো কিছু বললোনা ! ”

“আপনি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসেন। ওই ফ্ল্যাটটা পরিত্যক্ত। কেউ থাকেনা ওখানে । গত তিনমাস আগে এক বৃদ্ধ আংকেল রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যাওয়ার পর উনার ফ্যামিলী অন্য জায়গায় চলে গেছে। এরপর আরেকটা ফ্যামিলী এখানে উঠছিল। কিন্তু রাতের বেলা সাদা ফতুয়া পরা কে যেন হাঁটাহাঁটি করে দেখে ওরাও বাসা ছেড়ে দিছে। আপনি তাড়াতাড়ি নামেন- ”

এতোটুকু শোনার পর আমার গা বেয়ে হিমশীতল একটা স্রোত বয়ে গেল। অন্ধকারে এক দৌড়ে দরজার কাছে গেলাম। কে যেন আমার পিঠে হাত দিয়ে পিছনে ঘুরাতে চাইল।

এরপর কি হয়েছে জানিনা। ওখানেই জ্ঞান হারাই। পরে স্টুডেন্ট এসে আমাকে উদ্ধার করে।

2 Comments

Add a Comment
  1. অদ্ভূত তো। এটা সত্য কাহিনী?

  2. এটা হচ্ছে সত্য মিথ্যার ৭ঃ৩ কম্বিনেশন 😀

Leave a Reply